চর্যাপদ – বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন
চর্যাপদ হল বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন। চর্যা নিয়ে বহুদিন ধরেই নানা চর্চা। কে কবে এই চর্যা আবিষ্কার করেন? এগুলি আসলে কী? কবে প্রকাশ ? -ইত্যাদি নানা তথ্য এই আলোচনায় পাওয়া যাবে। এই আলোচনার বাইরেও আগ্রহীরা আমাদের ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখুন যা নানা তথ্যে সমৃদ্ধ। প্রাচীন ও মধ্যযুগের আলোচনায় চর্যাপদের গুরুত্ব অপরিসীম।
চর্যাপদ সংক্রান্ত আমাদের ভিডিও টিউটোরিয়াল চর্যাপদের খুঁটিনাটি, গুরুত্বপূর্ণ ১০টি চর্যার আলোচনা, চর্যাপদের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর এই আলোচনাগুলি নিঃসন্দেহে উপকারে আসবে।
চর্যাপদ – আবিষ্কার ও প্রকাশ
মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় বাংলা পুঁথির সন্ধানে বেশ কয়েকবার (১৮৯৭, ‘৯৮ এবং ১৯০৭ খ্রিঃ) নেপালে গিয়েছিলেন এবং নেপালের রাজদরবার থেকে পুরনো নেওয়ারি (নেপালি) অক্ষরে লেখা কয়েকটি পুঁথি উদ্ধার করেন ১৯০৭ খ্রিঃ। শাস্ত্রী মহাশয় সেগুলিকে একত্র করে ১৯১৬ খ্রিঃ বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে ‘হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা’ নামে প্রকাশ করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, লালগোলার রাজা যোগীন্দ্রনারায়ণ রায়ের অর্থানুকুল্যে গ্রন্থটির প্রকাশ হয়।
পদ ও পদকর্তা
চর্যায় মোট পঞ্চাশটি পদের কথা বলা হলেও পুঁথির কয়েকটি পাতা (৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৬৬) নষ্ট হওয়ায় তিনটি পদ (২৪, ২৫, এবং ৪৮ সংখ্যক পদ) সম্পূর্ণ এবং একটি পদের (২৩ সংখ্যক) শেষাংশ অপ্রাপ্ত অবস্থায় থেকে গেছে। অতএব পুঁথিতে মোট সাড়ে ছেচল্লিশটি পদ আছে। চর্যার রচয়িতা হিসেবে মোট ২৪ জন কবির কথা বলা হলেও ২২ জন কবি পাওয়া যায়। চর্যার প্রথম রচয়িতা লুই পা এবং শ্রেষ্ঠ রচয়িতা কাহ্ন পা।
প্রকৃত নাম
চর্যার পুঁথিটির প্রকৃত নাম কী – এ নিয়ে নানা পণ্ডিতে নানা মত প্রকাশ করেছেন। আবার এর রচনাকাল নিয়েও আছে নানা মত-পার্থক্য। চর্যার ভাষাকে বলা হয় ‘সন্ধ্যাভাষা’। চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন কিনা এ বিষয়ে প্রথম দিকে কিছু তর্ক থাকলেও ১৯২৬ খ্রিঃ ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় তাঁর ODBL গ্রন্থে এ বিষয়ে সুনিশ্চিত মতামত দিয়ে দেখিয়েছেন যে চর্যাপদ অন্য কোনো ভাষার নয়, বাংলা ভাষারই আদি সাহিত্যিক নিদর্শন।